
দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সাজোয়া যানে জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনসিপি) নেতাদের ওঠা নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করার জেরে দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোসফেকুর রহমানকে অবশেষে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্টের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যার পর তার ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা একটি স্ট্যাটাস— “ট্যাংকের এসি খুব আরামদায়ক শুনেছি”— ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া এ মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতাকর্মীরা।
রাত ৮টার পর থেকে সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় এবং মোসফেকুর রহমানের অপসারণ ও গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এই নিউজ লেখার সময় পর্যন্ত আন্দোলন চলমান ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর জেলার আহ্বায়ক একরামুল ইসলাম আবির বলেন, যারা আমাদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের নিয়ে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার এমন ব্যঙ্গাত্মক বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এএসপি মোসফেকুর রহমানের প্রত্যাহার এবং দ্রুত গ্রেফতার চাই। না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসাইন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান, অভিযোগের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং আগামীকাল (১৭ জুলাই) তাকে হেডকোয়াটার্সে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি (হেডকোয়াটার্স) মিয়া মাসুদ করিম এক লিখিত আদেশে জানিয়েছেন, মোসফেকুর রহমানকে তাৎক্ষণিকভাবে সদর দপ্তরে রিপোর্ট করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় তাদের রক্ষায় সেনাবাহিনীর সাজোয়া যান হস্তক্ষেপ করে। এই ঘটনাকেই ট্রল করে মোসফেকুর তার ফেসবুক পোস্ট দেন। এরপর থেকেই ক্ষোভ দানা বাঁধে সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শুধু প্রত্যাহার নয়, পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রেফতার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন আরও তীব্র হবে