গোয়াইনঘাট নদীপথে ‘গডফাদার’ স্টারলিংয়ের নেতৃত্বে চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য!

|

সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের গোয়াইনঘাট নদীপথ যেন এখন আর স্রোতের গতি মাপা জলপথ নয়, বরং তা রূপ নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘অঘোষিত রাজত্বে’। নদীপথজুড়ে চলছে প্রকাশ্য চাঁদাবাজি, যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কথিত গডফাদার স্টারলিং। তার ছত্রছায়ায় মাঠপর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন গোলাম কিবরিয়া সাত্তার, রুহুল ও দিলকাস সহ প্রায় ১৭ থেকে ২০ জনের একদল দুষ্কৃতকারী। গোলাম কিবরিয়া সাত্তার ২০০১ সালে আওয়ামী লীগে এবং রুহুল ২০০৫ সালের শেষের দিকে বিএনপিতে যোগ দেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা এই গোষ্ঠী এখন গোয়াইনঘাট নদীপথে নৌযান মালিকদের জন্য এক আতঙ্কের নাম।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পাথর পরিবহনকারী নৌযান, নৌপথের ব্যবসায়ী ও খাজনা দাতাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে। চাঁদা না দিলে নৌ মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, নৌকা আটকে দেওয়া কিংবা মালামাল লুটে নেওয়ার মতো ঘটনারও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এই চক্রটি কিছু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ‘নীরব সহযোগিতা’ পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে সাধারণ নৌযান মালিক ও শ্রমজীবী মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে আবার প্রশাসনের ভয়ে মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে কয়েকজন নৌযান মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা না দিলে নদীতে চলা অসম্ভব। আমরা প্রশাসনের কাছে বহুবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। বরং যারা প্রতিবাদ করে, তাদেরকেই নানাভাবে হয়রানি করা হয়।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, গোয়াইনঘাটের নদীপথ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক রুট। এখানে অব্যাহত চাঁদাবাজি শুধু নদীপথ নয়, গোটা অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন এবং আইন-শৃঙ্খলার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

স্থানীয়দের দাবি, এই চাঁদাবাজ চক্রকে চিহ্নিত করে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক, এবং নদীপথে নিরাপত্তা জোরদার করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক।

গোয়াইনঘাট নদীপথ যেন গডফাদারদের হাতে জিম্মি। প্রশাসন যদি এখনই সঠিক পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই জলপথের ভবিষ্যৎ হবে ভয়াবহ এবং চাঁদাবাজির সংস্কৃতি আরও গেড়ে বসবে।

GBC News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *