
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নে এক অবিবাহিত তরুণীর নামে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে মাতৃত্বকালীন ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে। ভাতার টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে এক নারী ইউপি সদস্যার জামাতার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে। বিষয়টি স্থানীয় মহিলাবিষয়ক কার্যালয়ের সাম্প্রতিক যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়ে।
অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আংগারপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগম। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর সুপারিশে ভুয়া তথ্য দেখিয়ে তালেব মেম্বারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের মেয়ে আক্তারিনা আক্তারকে গর্ভবতী দেখিয়ে ভাতার আবেদন করা হয়। অথচ আক্তারিনা এখনো অবিবাহিত এবং নিজের নামেই এই ভাতার বিষয়ে কিছু জানেন না।
২০২৪ সালের অক্টোবরে আক্তারিনার নামে ভাতার আবেদন করা হয়। সেখানে স্বামীর নাম দেওয়া হয় ‘পায়েল’ এবং একটি গর্ভাবস্থার সনদপত্র সংযুক্ত করা হয়। আবেদনটি গৃহীত হলে ৮০৫ টাকা হারে তিন বছর পর্যন্ত ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য যেই মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হয়, সেটি ভুক্তভোগী আক্তারিনার নয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই নম্বরটি ইউপি সদস্যা নুরনাহার বেগমের জামাতার। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, তাঁর স্ত্রীর নাম আক্তারিনা। কিন্তু খতিয়ে দেখা গেলে দেখা যায়, তাঁর স্ত্রীর প্রকৃত নাম সুরাইয়া আক্তার।
ভুক্তভোগী আক্তারিনা আক্তার বলেন, “আমি অবিবাহিত, কোনো ভাতা বিষয়ে জানি না। যারা এই জালিয়াতিতে জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করি।”
অভিযুক্ত ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগম মুঠোফোনে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “আমার ভুল হয়েছে। আমার মেয়ে অসহায়, তার বয়স কম হওয়ায় আমি অন্যজনের এনআইডি ব্যবহার করেছি।”
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা মোস্তারি বলেন, “বিষয়টি যাচাই করে অনিয়ম ধরা পড়েছে। সেই ভাতা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সরকার জানান, “এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির এমন কাজে প্রশাসন বিস্মিত। তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”