গোয়াইনঘাটে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি: প্রশাসনের নীরবতায় উদ্বিগ্ন জনসাধারন

|

সিলেট প্রতিনিধি:

সিলেটের উত্তর জনপদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা গোয়াইনঘাটে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। জনসাধারণের অভিযোগ, সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে চলছে বালু-পাথর উত্তোলন ও চাঁদাবাজির মহোৎসব।

সরকারি ভাবে উপজেলার হাদারপার, লেংগুড়া ও সারি বালুমহাল লিজ দেওয়া হলেও, পানথুমাই, লুনি, আহার কান্দি, বালুর হাওর, জাফলং, ফতেপুর, চারগ্রামসহ অনেক স্থানে কোনো ধরনের লিজ না থাকা সত্ত্বেও ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন চলছে। এসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় কিছু বিট অফিসার ও ভূমিখেকোদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নেমে আসে নিপীড়ন। এদিকে প্রশাসনের নাকের ডগায় এই পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

সরকারি সূত্রে জানা যায়, গোয়াইনঘাটের জাফলং পাথর কোয়ারি কিংবা নদীপথ থেকে পরিবেশ বিধ্বংসী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বালু-পাথর উত্তোলনের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।

গত ১৪ জুন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দুইজন সদস্য—পরিবেশবাদী উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং খনিজ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান—জাফলং পাথর কোয়ারি সরেজমিন পরিদর্শন করে ১৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে যেকোনো ধরনের উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা দেন।

এ নির্দেশনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার তোফায়েল আহমেদ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উপদেষ্টাদের কঠোর নির্দেশনার একদিন পর থেকেই সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন নদীপথে আবারও শুরু হয় বালু-পাথর উত্তোলন।

ইসিএ (পরিবেশ সংবেদনশীল এলাকা) অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলেও নির্বিঘ্নে চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম। নৌ ও সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ চলাকালে বড় অংকের চাঁদা আদায় করছে একটি অসৎ ও সংঘবদ্ধ চক্র।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতা জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—তারা কি সরকারের পক্ষে না বিপক্ষে?

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, অবিলম্বে এই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হবে এবং জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে।

GBC News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *